সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বিসিবির খাবার খেয়ে ২০ সাংবাদিক অসুস্থ, ক্যাটারিং সার্ভিস বাতিল

ক্রীড়া ডেস্ক : অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের তরুণ ক্রীড়া সাংবাদিক অর্ণব মজুমদারের (২৭) আকস্মিক মৃত্যু এখনো অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। গত বৃহস্পতিবার স্টেডিয়ামে পেশাদার কাজ শেষ করে বাসায় যাওয়ার পর পেটের পীড়ায় ভুগছিলেন। পরদিন বাসার পাশের একটি ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে গিয়ে জ্ঞান হারান অর্ণব। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। চিকিৎসকরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার।

সাংবাদিক অর্ণবের পেটের পীড়ায় ভুগে মৃত্যুর পর জানা গেল, চলমান বিপিএলেপেশাদার কাজে প্রেসবক্সে আসা ক্রীড়া সাংবাদিকরা প্রতিদিনই পেটে পীড়া অনুভব করছেন। বিপিএলের শুরু থেকেই খাবার নিয়ে অসন্তুষ্টি ছিল সাংবাদিকদের। শুক্রবার দুপুরের খাবার ও সন্ধ্যার নাস্তা খেয়ে বাসায় ফেরার পর রাতে প্রায় ২০ জনের বমি ও পাতলা পায়খানা হতে থাকে। অসুস্থতার কারণে শনিবার মিরপুরে ম্যাচ কাভার করতে আসতে পারেননি কয়েকজন সাংবাদিক।

সাংবাদিকদের সবাই জানিয়েছেন, খেলা চলাকালীন প্রেসবক্সে সরবরাহকৃত খাবার খেয়েই তারা শারীরিক এই সমস্যায় পড়েছেন। বিপিএলের প্রথম দুই দিনে দায়িত্ব পালন করা সাংবাদিক এবং ক্যামেরাপার্সনদের অনেকেই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে পরের ম্যাচগুলোতে মাঠে আসতেই পারেননি।

প্রেসবক্সসহ চলতি বিপিএলে বিভিন্ন সাব কমিটির জন্য খাবার সরবরাহের দায়িত্বে আছে সেভেন হিলস নামের একটি রেস্টুরেন্ট। প্যাকেটে আসা এই খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একে তে ঠাণ্ডা খাবার। তারওপর অনেক আগে তৈরি করার কারণে প্যাকেটজাত এই খাবারের খাদ্যমান এমনিতেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দুপুরবেলায় নিম্নমানের এই ঠাণ্ডা, অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে দায়িত্বরত ক্রীড়া সাংবাদিকরা দল বেঁধে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

ক্রীড়া সাংবাদিক অর্ণব মজুমদারের প্রতি জায়ান্ট স্ক্রিনে স্মরণ করে বিসিবি। ফটো: বিসিবি

ডেইলি স্টার অনলাইনের ক্রীড়া প্রতিবেদক একুশ তাপাদার বিসিবির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর বেরিয়ে আসে ভয়াবহ চিত্র। তিনি লেখেন, ‘বিপিএলে দুপুরে সাংবাদিকের জন্য যে লাঞ্চ রাখা হয় তা মোটেও স্বাস্থ্যকর না। বেশ আগে রান্না করা ও প্যাকেটে থাকা সে খাবার ঠাণ্ডা। এই খাবার খেয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) আমাদের একজন সহকর্মী অসুস্থ বোধ করেন। আমরা আরও অনেকেই এ ক’দিন এই খাবার খেয়ে অস্বস্তি বোধ করেছি। আজ তাই আমরা অনেকেই বাইরে গিয়ে খেয়ে এসেছি। ম্যাচ কাভার করতে এসে বাইরে গিয়ে খাওয়া আমাদের পেশাজনিত কারণে একটা সমস্যা। খেলার অনেক কিছু মিস হয়ে যায়। অনুরোধ থাকবে, বিসিবি খাবার দেন ভালো কিন্তু সে খাবার যেন হয় ফ্রেশ। বেশি কিছু না- ভাত, ডিম ডালই দেন তবে তা যেন হয় ফ্রেশ।’

সেভেন হিলস রেস্টুরেন্টে যোগাযোগ করা হলে ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে শাহাবুদ্দিন আলম উৎপল জানান, ‘বিসিবির কাছ থেকে আমাদের কাছে এই অভিযোগ এসেছে। আমরা আমাদের খাদ্য তৈরির বিভাগের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে বৈঠকে বসবো। কেন এবং কি কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো সেটা জানতে চাইবো।’

তিনি জানান, ‘বিসিবির কাছে লম্বা সময় ধরে সেভেন হিলস বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহ করে আসছে, আগে কখনোই আমরা এমন অভিযোগ পাইনি। আজ পেলাম। আমরা সিরিয়াসভাবে বিষয়টার দিকে নজর দিচ্ছি।’

বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম জানান, তার ডিপার্টমেন্টের (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন) কয়েকজনও সেভেন হিলের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি জানান, এই খাবার বন্ধ করে দেয়া হবে। লজিস্টিক বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্য কোথাও থেকে খাবার আনা হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com